বার্ধক্য ও প্রতিবন্ধিতা ফোকাল পয়েন্ট ধারণার উত্পত্তি ও এর মাধ্যমে কী করা হবে তা বিস্তারিতভাবে তৈরি করার কাজটি কয়েকটি সংস্থা মিলে করেছে। যারা সবাই প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করে। এই সংস্থাগুলোর মধ্যে সিবিএম এবং হিউম্যানিটি অ্যান্ড ইনক্লুসন (এইচআই)-ও রয়েছে। বার্ধক্য ও প্রতিবন্ধিতা ফোকাল পয়েন্ট (ইংরেজিতে এইজিং অ্যান্ড ডিসঅ্যাবেলিটি ফোকাল পয়েন্টস বা সংক্ষেপে এডিএফপি)-কে কখনো কখনো প্রতিবন্ধিতা ও ঝুঁকিপূর্ণ ফোকাল পয়েন্টও বলা হয়ে থাকে। বার্ধক্য ও প্রতিবন্ধিতা ফোকাল পয়েন্টের কাজ হলো নারী, পুরুষ, ছেলে ও মেয়ে প্রতিবন্ধীদের এবং প্রবীণ বা বয়স্ক ব্যক্তিদের জরুরি সহায়তার আওতায় নিয়ে আসা বা অন্তর্ভুক্ত করা।
বর্তমানে এই ধরনের ফোকাল পয়েন্টগুলো অনেক ধরনের দুর্যোগে বা জরুরি অবস্থায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে, এবং এগুলো খুবই কার্যকর ও উপকারী হিসেবে ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে:
২. প্রতিবন্ধী ও প্রবীণ ব্যক্তিদের শনাক্ত করা এবং তাদেরকে সংশ্লিষ্ট ত্রাণ সেবা সহায়তা কার্যক্রমে পাঠানো/রেফার করার পাশাপাশি যাদের সুনির্দিষ্ট ও বিশেষায়িত সেবা (যেমন: মাতৃস্বাস্থ্য সেবা, পুনর্বাসন, মানসিক স্বাস্থ্য ইত্যাদি) দরকার তাদেরকে সেই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা;
৩. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠন এবং নারী, পুরুষ, মেয়ে ও ছেলে প্রতিবন্ধী এবং প্রবীণ বা বয়স্ক ব্যক্তিদের জরুরি ত্রাণ কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা, তাদেরকে এই ধরনের কার্যক্রমের সাথে যুক্ত করা এবং তাদের অ্যাডভোকেসি করার সামর্থ্য বাড়ানো যাতে করে তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অ্যাডভোকেসি করতে বা কথা বলতে পারে।
জরুরি পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অর্থাত্ জরুরি অবস্থার ধরনের উপর ভিত্তি করে এই ধরনের 'বার্ধক্য ও প্রতিবন্ধিতা ফোকাল পয়েন্ট' একটি নির্দিষ্ট স্থানে থাকতে পারে কিংবা এটি মোবাইল বা চলমান ধরনের হতে পারে। এই ধরনের ফোকাল পয়েন্টগুলোতে আউটরিচ সেবা ব্যবস্থা কিংবা আরো দুর্গম এলাকার ক্ষেত্রে ছোট আকারের স্যাটেলাইট ফোকাল পয়েন্ট হতে পারে। বিশেষ করে যখন কোন এক বা একাধিক সুনির্দিষ্ট বা বিশেষায়িত ধরনের সেবার প্রয়োজন হয় যেমন পুনর্বাসন, সহায়ক প্রযুক্তি কিংবা মানসিক সহায়তা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেখানে বিশেষায়িত সেবাগুলো পাওয়া দুস্কর কিংবা অনেক দূরে অবস্থিত, এমন পরিস্থিতিতে ফোকাল পয়েন্টগুলো একই কাঠামোর মধ্যেই অস্থায়ীভাবে ওই সেবাগুলো দিতে পারে।
জরুরি অবস্থা হতে পারে এমন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস (ডিআরআর) কৌশলের অংশ হিসেবে ফোকাল পয়েন্টগুলো আগে থেকেই শনাক্ত করা ও তাদেরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে। প্রশিক্ষণের মধ্যে যে সকল বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে সেগুলো হলো — মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়, মানসিক স্বাস্থ্যের প্রাথমিক পরিচর্যা বিষয়ের উপর সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ যাতে করে 'বার্ধক্য ও প্রতিবন্ধিতা ফোকাল পয়েন্টগুলো'-র কর্মীরা জরুরি পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়া বা অসুস্থ হয়ে পড়া মানুষদের প্রয়োজনে যথাযথভাবে প্রয়োজনীয় সাড়া দিতে পারে।