বাছাই করা
জরুরি পরিস্থিতিতে নগদ হস্তান্তর/ নগদ সহায়তা দেওয়ার জন্য উপকারভোগী নির্বাচন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই নিরপেক্ষ হতে হবে এবং শুধু প্রয়োজনের নিরিখেই/ভিত্তিতেই উপকারভোগী নির্বাচন করতে হবে। শুধুমাত্র প্রতিবন্ধিতার ভিত্তিতে নগদ সহায়তার জন্য লক্ষ্য জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করাটা মানবিক মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এবং এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে নেতিবাচক ফলাফল তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে অপবাদ ও বর্জন করার মতো ঘটনা বাড়তে পারে। নগদ সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে উপকারভোগী নির্বাচনে তাদের সামর্থ্য, সম্পদ ও আর্থ-সামাজিক অবস্থা মূল্যায়ন করতে হবে। আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মানদন্ড হিসেবে আরো যে বিষয়গুলো দেখতে হবে সেগুলোর ব্যয় প্রবেশগম্যতা, সহায়ক উপকরণ/ডিভাইস, ব্যক্তিগত সহায়তা, পরিবহন/যাতায়াত এবং চিকিত্সার চাহিদার সাথে সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য খরচ।
সাধারণ বিষয়গুলো বিবেচনার পাশাপাশি নিচের বিষয়গুলোও বিবেচনা করুন:
- দুর্যোগে ক্ষতির মাত্রা বিবেচনায় রাখুন। যেমন, যদি দুর্যোগের কারণে পরিবারের সদস্যরা আঘাতপ্রাপ্ত হয় কিংবা তাদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে নিয়মিত কার্যক্রমের অতিরিক্ত হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা ও পুনর্বাসন সহায়তার প্রয়োজন হবে।
- পূর্ব থেকে বিদ্যমান প্রতিবন্ধিতার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা বা দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর জন্য নির্দিষ্ট ধরনের স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধ কিংবা সহায়ক যন্ত্র প্রতিস্থাপন করার দরকার হতে পারে; আর তাতে করে পরিবারের খরচ বাড়বে।
- পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা: পরিবারের উপার্জনকারী সদস্যদের সংখ্যা বনাম নির্ভরশীল সদস্য সংখ্যা। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি মানেই নির্ভরশীল এমনটা কখনো ভাবতে যাবেন না।
- বিশেষভাবে সেই সব পরিবারের কথা বিবেচনা করুন যেই পরিবারগুলো একক নারী প্রধান, শিশুদের দ্বারা, প্রবীণ ব্যক্তিদের দ্বারা কিংবা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দ্বারা চালিত।
- নারী, পুরুষ ও শিশু প্রতিবন্ধীদের ঝুঁকির বিষয়গুলো নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সাধারণত অপ্রকাশিত থাকে কিংবা দৃশ্যমান হয় না, বিশেষ করে যারা উচ্চ অপবাদ বা কলঙ্কের মুখোমুখি হয় কিংবা যাদের প্রতিবন্ধিতা সেভাবে দৃশ্যমান নয় কিংবা কম দৃশ্যমান (যেমন মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অবস্থাসমূহ, দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা, এইচআইভি/এইডস, প্রবীণ ব্যক্তি কিংবা যাদের বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধিতা রয়েছে)। সাধারণত কোন একটি জনগোষ্ঠীতে প্রত্যাশিত প্রতিবন্ধিতার সংখ্যাটি হলো ১৫%, তাই ১৫ শতাংশ প্রতিবন্ধিতা চিহ্নিত বা শনাক্ত না হলে বিষয়টি উপকারভোগী নির্বাচন কাজে নিয়োজিতদের জানান এবং এর কারণ শনাক্ত করুন।
- একটি প্রতিনিধিত্বমূলক কমিউনিটিভিত্তিক নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন যেখানে যোগ্যতার মানদন্ড ও কারা প্রাপক হবে সেটা তুলে ধরুন। আর এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধরনের নারী ও পুরুষ প্রতিবন্ধীদের প্রতিনিধিত্বমূলক অংশগ্রহণ রাখুন।