সকল শিশুর শিক্ষার অধিকার আছে, এমনকি জরুরি ও সংঘর্ষমূলক পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটেও।
- মনে রাখবেন সকল শিশুরই শেখার অধিকার আছে;
- শিশুদের মধ্যেকার পার্থক্যগুলোর স্বীকৃতি দিন ও তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রাখুন: বয়স, জেন্ডার, জাতিগত, ভাষাগত, প্রতিবন্ধিতা কিংবা অন্যান্য অবস্থা, ইত্যাদি;
- সকল শিশুর চাহিদা পূরণ করতে শিক্ষা কাঠামো, ব্যবস্থা ও পদ্ধতিগুলো চালু করুন। সহজ কিছু উপায়ের মাধ্যমে স্কুল অবকাঠামো (স্কুল ভবনে প্রবেশগম্যতা এবং ক্লাসরুমে প্রবেশগম্যতা) তৈরি করা ও সকলকে শিখতে আসার জন্য আগ্রহী করে তুলতে পারে;
- স্কুলে সংস্কৃতি, নীতিমালা এবং চর্চাগুলো পরিবর্তন ও পুনর্গঠনের চর্চাগুলো একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। জরুরি ও পুনরুদ্ধার পরিস্থিতি এই ধরনের পরিবর্তনের সুযোগ এনে দিতে পারে;
- অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা একটি গতিশীল প্রক্রিয়া যা ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে এবং জরুরি অবস্থার প্রেক্ষাপটে শিক্ষাকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সুযোগ তৈরি হতে পারে। এই সময়ে প্রবেশগম্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা পুনর্গঠন করার সুযোগ তৈরি হয় এবং প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতার মাধ্যমে প্রতিবন্ধিতা অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাদান পদ্ধতির মাধ্যমে প্রচার করার মতো পরিবেশ তৈরি হয়।
জরুরি অবস্থায় শিক্ষাকে প্রবেশগম্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার পরামর্শ/টিপস:
- জরুরি শিক্ষা যাচাই বা মূল্যায়নকালে অবশ্যই লিঙ্গ, বয়স ও প্রতিবন্ধিতা সংক্রান্ত পৃথক তথ্য/উপাত্তের ভিত্তিতে হতে হবে। সকল শিশুর জন্য শিক্ষাকে প্রবেশগম্য করা নিশ্চিত করা মূল লক্ষ্য নিয়ে জরুরি অবস্থার আগে কোন শিশু স্কুলে যেতো না, কেন যেতো না এবং তারা কোথায় বাস করত সেই তথ্য জানতে হবে। এর মানে হলো এই সাধারণ প্রশ্নগুলোকে জরিপ ও দ্রুত মূল্যায়ন টুলসে বা উপকরণে পরিণত করা। যাচাই বা মূল্যায়নকালে শিশুদের কাছে জানতে চান যে কে স্কুলে যেতো না; তারা তথ্য পাওয়ার জন্য একটি বড় ধরনের উত্স;
- ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিভিন্ন দল ও সংস্থার সাথে যোগাযোগ করুন (যেমন ডিপিও কিংবা স্ব-সহায়ক গ্রুপ)। এর মাধ্যমে ধীরে ধীরে কোন কোন শিশুরা শিক্ষার বাইরে রয়ে গেছে এবং কেন সেসব জানার পাশাপাশি তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করতে কী করতে হবে তাও জানা সম্ভব হবে;
- একটি কমিউনিটি (কিংবা ক্যাম্প) শিক্ষা পরিষদ (এডুকেশন কাউন্সিল) তৈরি করুন। এই পরিষদে স্থানীয় কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, অভিভাবক প্রতিনিধি, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতিনিধি প্রমুখদের সম্পৃক্ত করুন। বিস্তৃত পরিসরের অংশগ্রহণ ভবিষ্যতের যে কোন কিছু বাস্তবায়নকে সহজ ও সুন্দর করবে;
- স্কুলে যাওয়া সহজ করা ও সেখানে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা দিতে কী কী করতে হবে সেই পরিকল্পনা খুঁজে পেতে কমিউিনিটি শিক্ষা পরিষদ এবং মা-বাবা ও শিশুদের নিয়ে কাজ করুন;
- শিক্ষার্থীদের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে শিক্ষকদের সহায়তা করুন। ক্লাসরুম/শ্রেণিকক্ষ সাজানো, প্রশিক্ষণ, ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশন, শিক্ষকদের সহায়তা করা এমন কিছু ক্ষেত্র যেখানে সহজেই অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রবেশগম্যতার উন্নতি ঘটানো সম্ভব এবং আপনার শিক্ষা কর্মসূচি অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য কী করতে হবে দ্রুত শনাক্ত করুন;
- প্রবেশগম্য এমন শিক্ষা উপকরণ প্রদান করুন;
- এমন ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে আপনার শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত করুন যাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা সম্পর্কে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা রয়েছে; প্রয়োজনে অন্য সংস্থার সাহায্য নিন।
জরুরি পরিস্থিতিতে শিক্ষা নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলোর অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাকে ধীরে ধীরে চালু করার জন্য পরিকল্পনা করা উচিত্। তাদেরকে একথা মনে রাখতে হবে যে সকল চ্যালেঞ্জের রাতারাতি কোন সমাধান নেই। যে কোন প্রেক্ষাপটে, এমনকি যখন সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকে বা সম্পদ কম থাকে এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও প্রত্যেকে কিছু না কিছু করতে পারে — সেটা যতোই ছোট হোক না কেন — তাই আরো বেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়ার জন্য এখনই কাজ শুরু করুন।
এই বিষয়ের উপর বিস্তারিত নির্দেশনা পাওয়ার জন্য দি ইন্টার-এজেন্সি নেটওয়ার্ক ফর এডুকেশন ইন এমারজেন্সি এবং ইউনিসেফের নির্দেশিকা দেখা যেতে পারে (নিচে সূত্রে উল্লেখিত লিঙ্ক দেখুন)।