টুইন ট্র্যাক পদ্ধতি
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুযোগের সমতা
টুইন-ট্র্যাক পদ্ধতি সাধারণত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রগতির কাজে ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে প্রতিবন্ধিতা বিষয়টিকে মূলধারাকরণের জন্য বিশেষায়িত দক্ষতার প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষ করে মানবিক কার্যক্রমে নিয়োজিত সংস্থাগুলোর মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে এই বিষয়ে তাদের মধ্যে বোঝাপড়া ও ঐক্যমত তৈরি করা। যাতে করে সবাই বুঝতে পারে যে, উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে কমিউনিটির সকল সদস্য মানবিক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে পারে, কারণ প্রত্যেকেরই যার যার জায়গা থেকে সম্পৃক্ত হওয়ার মতো সামর্থ্য রয়েছে। তারা যেন আরো বুঝতে পারে যে, সকলের সুরক্ষা ও ত্রাণ পাওয়ার ক্ষেত্রে একই ধরনের মৌলিক চাহিদা রয়েছে। যা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য। এছাড়াও, প্রতিবন্ধীদের জন্য জরুরি ত্রাণ ও সহায়তা সেবায় প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণে (মনিটরিংয়ে) সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোজন করার ও প্রবেশগম্যতার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
টুইন-ট্র্যাক পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে ত্রাণ ও সুরক্ষা কার্যক্রমে নারী, পুরুষ, ছেলে ও মেয়ে নির্বিশেষে সকল প্রতিবন্ধী ও সকল ধরনের প্রতিবন্ধীদের — সেটা হতে পারে বধির প্রতিবন্ধী, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, শারীরিক প্রতিবন্ধী, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী — পূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাধাগুলো দূর করা সম্ভব হয় এবং প্রবেশগম্যতা সহজতর হবে। এছাড়াও, একই সময়ে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে নিয়োজিতরা প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের সুনির্দিষ্ট চাহিদার ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট সমাধানগুলো দিতে পারেন। বিশেষ করে, যাদের আরো বেশি বা উচ্চতর সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে। এই ধরনের সেবা সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সবসময় অবহিত সম্মতি, পছন্দ ও ব্যক্তির স্বাধীনতার নীতিমালা অনুসরণ করা হয়। এই ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠন এবং প্রতিবন্ধী-নির্দিষ্ট সংস্থাগুলোতে রেফার করার মাধ্যমে সহযোগিতা করা অপরিহার্য।
সহায়তা সেবাগুলোর উদাহরণ হতে পারে:
- সহায়ক উপকরণ এবং প্রযুক্তি
- পরিবার, ব্যক্তিগত সহায়তাকারী এবং যত্নকারীদের জন্য সুনির্দিষ্ট পুনর্বাসন কার্যক্রম ও সহায়তা
- স্কুলে প্রবেশগম্যতা পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট ধরনের শিক্ষা সংক্রান্ত (প্যাডাগোজিক) সহায়তা করা। বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়োগদান, প্রয়োজনে স্পিচ থেরাপিস্ট, মনোবিজ্ঞানী, বিশেষ দক্ষতার শিক্ষাবিদ প্রমুখের কাছে রেফার করা। পাঠদানে সহায়তা করা।
- শিশুদের প্রতিবন্ধিতা প্রাথমিক অবস্থায় বা দ্রুত শনাক্তকরণ এবং প্রতিবন্ধী শিশুদের ও তাদের পরিবারকে প্রাথমিক অবস্থাতেই বা দ্রুত সহায়তা করা।
- যে পরিবারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি রয়েছেন সেই পরিবারের পরিবহন ও অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সেবার চাহিদা পূরণের জন্য বাড়তি ভাতা নিশ্চিত করুন।
- ক্ষমতায়ন ও খাপ খাওয়ানোর কৌশলকে সহায়তা করার লক্ষ্যে "পিয়ার টু পিয়ার" বা একজনের সাথে অন্যজনের সহায়তা করার ব্যবস্থা করা।
মূলধারাকরণ কিংবা সুনির্দিষ্টকরণ পদ্ধতি নির্বিশেষে যে কোন কার্যক্রমে জেন্ডারকে গুরুত্ব দিতে হবে।